সর্বশেষ আপডেট : ১৭ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

লাল মাফলারে বাঁচল শত শত ট্রেন যাত্রীর প্রাণ

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

রেল লাইনে নাশকতা ঠেকাতে গত কয়েকদিন থেকেই রেললাইন পাহারা দিচ্ছিলেন আনসার সদস্য ইফতেখার রহমান। প্রতিদিনকার মতোই এক সহকর্মীকে নিয়ে পাহারায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এ সময় কিছুটা দূরে রেললাইনের ওপর আগুন জ্বলতে দেখেন। কাছে গিয়ে দেখেন রেললাইনের ওপর আড়াআড়িভাবে ফেলে রাখা কংক্রিটের স্লিপার।

রেললাইন ও স্লিপারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাধা বাঁশ ও গাছের লম্বা ডাল। এর ওপরে শুকনা কচুরিপানার স্তূপ। এরই মধ্যে শুনতে পান ট্রেনের হুইসেল। তৎক্ষণাৎ তিনি গলা থেকে মাফলার খুলে এক হাতে নিয়ে নিশানা ওড়ান। আর অন্য হাতে টর্চলাইট জ্বালিয়ে ট্রেন থামানোর সংকেত দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পকেট থেকে বাঁশি বের করে সজোরে বাজাতে থাকেন তিনি। ট্রেন থেমে যায়। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনে থাকা শত শত যাত্রীর জীবন।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের পাহানপাড় এলাকার রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।

ইফতেখার রহমান (৪৬) বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নে আনসার ও ভিডিপির দলনেতা। তিনি ওই ইউনিয়নের চাকুল গ্রামের মৃত নিজামুদ্দিনের ছেলে।

ঘটনার রাতে তিনি বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে আনসার ও ভিডিপি সদস্য নজিবর রহমানকে নিয়ে পাহারায় ছিলেন।

ইফতেখার রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাতে সহকর্মীকে নিয়ে ১ নম্বর সিগন্যাল পয়েন্ট থেকে দক্ষিণে পাহারা দিচ্ছিলাম। তখন হঠাৎ করে রেললাইনের ওপর আগুন জ্বলতে দেখি। কাছে গিয়ে সেখানে রেললাইনের ওপর সিমেন্টের স্লিপারের সঙ্গে বাঁশ ও গাছের ডাল বেঁধে রাখা দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে গলা থেকে মাফলার খুলে ট্রেনের দিকে যেতে যেতে ওড়াতে থাকি। হাতে থাকা টর্চলাইট জ্বালিয়ে ট্রেনচালককে ট্রেন থামানোর সংকেত দিই। চালক ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে ট্রেন থামান।

রেললাইনে নাশকতার খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম, সহকারী পুলিশ সুপার (বিরামপুর সার্কেল) মঞ্জরুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার। পরে স্থানীয় আনসার সদস্য ও রেলওয়ে কর্মীদের সহযোগিতায় রেললাইনের ওপরে রাখা স্লিপার, বাঁশ, কাঠ ও কচুরিপানা সরিয়ে ফেলা হয়।

বিরামপুর রেলস্টেশনের মাস্টার আসাদুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার রাতে চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে পৌঁছায়। পরে দুই মিনিট বিরতি দিয়ে ১০টা ৩৮ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পরক্ষণেই রেললাইনে পাহারারত একজন আনসার সদস্য মুঠোফোনে ৩৪৯–এর ১ থেকে ২ নম্বর কিলোমিটার পয়েন্টে রেললাইনের ওপর স্লিপার ফেলে আগুন লাগানোর খবর দেন। পুলিশ ও আনসার সদস্যের সহযোগিতায় রেললাইন থেকে স্লিপার সরানো হয়। রাত ১১টা ২৩ মিনিটে সীমান্ত এক্সপ্রেস খুলনার উদ্দেশে চলে যায়।

ওসি সুব্রত কুমার সরকার বলেন, রেললাইনের ওপর স্লিপার ফেলে ও আগুন ধরিয়ে দৃর্বৃত্তরা বড় ধরনের নাশকতার চেষ্টা করছিল। এ ঘটনায় আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি বিরামপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হায়দার আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: